অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্ণ নতুনদের জন্য
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কথা চিন্তা করলে মনে পরে যায় Amazon, Ebay, Aliexpress, Envato ইত্যাদি অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক গুলির কথা । অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করা যায় ? একজন নতুন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে হলে কিভাবে শুরু করতে হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পর্ণ পোস্ট টি পড়ুন ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ?
অনলাইনে আয় করার জন্য একটি জনপ্ৰিয় পেশা হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং । অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটা মাধ্যম যা দ্বারা আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোন একটি কোম্পানির প্রডাক্ট প্রমোট করে টাকা আয় করতে পারেন । সেটি হতে পারে ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট অথবা ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট ।
ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট কি ?
টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, পেনড্রাইভ ইত্যাদি হলো ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট । এক কথায় বলতে গেলে যে প্রোডাক্ট গুলি আপনি হাতে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট কি ?
যেকোনো সফটওয়্যার, ডোমেইন-হোষ্টিং, ওয়ার্ডপ্রেস থিম প্লাগিন, ইবুক, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি হলো ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট । এক কথায় বলতে গেলে যা আপনি হাতে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন না ।
শুরুতে আপনাকে জানিয়ে দেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইন থেকে আয় করার জন্য ইউটিউব চ্যানেল, ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজ থাকতে হবে ।
কেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন ?
আমরা সকলেই কোন না কোন প্রোডাক্ট পছন্দ করে থাকি । সেটি হতে পারে ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট কিংবা ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট । যেমন আমি পছন্দ করি ভার্চুয়াল প্রোডাক্ট গুলির মধ্যে নির্দিষ্ট একটি প্রোডাক্ট সফটওয়্যার । এখন আমি চাইলে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যার কোম্পানির সাথে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে পারব কেন প্রকার ইনভেস্ট ছাড়া । তেমনি আপনি আপনার পছন্দের প্রোডাক্ট নিয়ে কোন প্রকার ইনভেস্ট ছাড়াই টাকা আয় করতে পারেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অ্যামাজন কিংবা আলীএক্সপ্রেস থেকে । সবচেয়ে বড় সুবিধা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য কোন প্রকার দক্ষতা বা ইনভেস্ট এর কোন প্রয়োজন হয় না।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা তুলবেন কিভাবে:
আপনি যখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে শুরু করবেন তখন আপনার টাকা গুলো আফিলিয়েট একাউন্টে জমা থাকবে , আপনি চাইলে যেকোন সময় সেই টাকা গুলো ব্যাংক কিংবা পেপাল এর মাধ্যমে তুলতে পারবেন।
যে ভাবে নতুনরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন-
- প্রথমে ভালো করে রিসার্স করে নিন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে ।
- আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটা নিশ সিলেক্ট করুন। যেমন আমি একটা নির্দিষ্ট নিশ হিসাবে সিলেক্ট করলাম সফটওয়্যার।
- নিশ রিলেটেড ভালো কোনো এক অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক এ জয়েন করুন।
- আপনার ব্লগ সাইটে নিস রিলেটেড পূর্ণ নিয়ে ব্লগ লিখতে থাকুন।
নিশ কি ?
নুতন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার দের কাসে নিশ শব্দ নুতন মনে হতে পারে। এক কথাই বলতে গেলে নিশ হলো নির্দিষ্ট একটা টপিক। যেমন ধরুন আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ওয়ার্ডপ্রেস থিম নিয়ে লিখালিখি করেন এখানে ‘ওয়ার্ডপ্রেস থিম’ হলো নিশ। নিশ কাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ? ব্লগার , অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার , সিপিএ মার্কেটার , আর্টিকেল রাইটার ইত্যাদির জন্য নিশ গুরুত্বপূর্ণ। নিশ আর উপর নির্ভর করে আপনার উপার্জন এবং সাফল্যের সম্ভাবনা। সুতরাং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইন থেকে আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে সঠিক এটি নিশ নির্বাচন করতে হবে।
কি ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা প্রমোশন করবেন:
আপনি চাইলে যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিংবা প্রমোশন করতে পারেন। ফিজিক্যাল পূর্ণ গুলি অনলাইন অফলাইন দুইভাবেই বিক্রি হয়ে থাকে তাই এসব পর্ণ গুলিতে কমিশন কম হয়ে থাকে। কিন্তু ভার্চুয়াল পূর্ণ শুধুমাত্র অনলাইনে সেল হয়ে থাকে তাই এই পূর্ণ গুলোতে কমিশন অনেক বেশী হয়ে থাকে। সুতরাং আপনি চাইলে ভার্চুয়াল পূর্ণ গুলির মধ্যে যেকোনো একটি পূর্ণ নিয়ে কাজ করতে পারেন।
যে ভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা যায় আয় করবেন :
চলুন তাহলে এবার মূল কাজে চলে যাই। ইতিমধ্যে আপনি জেনে গেছেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য একটি ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পরে জয়েন করতে হবে একটি অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে। আপনি চাইলে আপনার পছন্দ মতো যেকোনো অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে জয়েন করতে পারেন সেটি হতে পারে Amazon Associates কিংবা অন্য কোনো নেটওয়ার্ক। আমি উদাহরণ স্বরূপ আপনাকে দেখাবো bdshop.com কে ব্যাবহার করে। তাই প্রথমে আমি চলে যাবো www.bdshop.com এ। তার পর নাম, মোবাইল নম্বর, পাসওয়ার্ড, ইমেইল, দিয়ে রেজিস্টার করবো। এর পর bdshop.com এর Affiliate Program এ যুক্ত হবো। BdShop.COM এ অসংখ্য প্রোডাক্ট রয়েছে সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দের পণ্যটি কে সিলেক্ট করুন এবং সেই প্রোডাক্ট এর অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক তৈরি করুন। ধরুন আমি Vivo Y30 মোবাইলের অ্যাফিলিয়েট লিংক তৈরী করলাম। গুগোল এবং ইউটিউব থেকে প্রথমে এই ফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিব এবং সেই ফোনটি উপরে আমি আমার ওয়েবসাই এ আমার নিজের মতো করে ব্লক লিখব। সেই ব্লগে আমার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করবো। যখন কোন ট্রাফিক আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে প্রডাক্ট কিনবে তখন সেখান থেকে আপনি একটা কমিশন পাবেন।
মনে রাখবেন যেহেতু পণ্য আপনার নিজের নয় তাই অডিয়েন্সের বিশ্বাস অর্জন করুন। শুধুমাত্র একটি প্রডাক্টের ভালো দিকগুলো ব্লগে উল্লেখ করেন তাহলে কখনো কাস্টমার আপনার ব্লগকে বিশ্বাস করবে না। তাই প্রডাক্টের এর ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
যেকোন পশ্ন হলো ওয়েবসাইট তৈরি করলাম ব্লগ লিখলাম অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করলাম প্রোডাক্ট এর ভাল খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা করলাম কিন্তু ট্রাফিক পাবো কিভাবে ?
Facebook, LinkedIn, Pinterest, Instagram, YouTube ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়া সাইট , অথবা ইমেইল মারকেটিং কিংবা SEO করে ফ্রি ট্রাফিক জেনারেট করে দ্রত আর্নিং জেনারেট করতে পারবেন ।
স্বল্প সময়ে যেভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ সফল হবেন
স্বল্প সময়ে অ্যাফিলিয়েট মারকেটিং করে সফল হওয়ার জন্য পেইড ট্রাফিক বা পেইড মার্কেটিং এর বিকল্প নেই। পেইড ট্রাফিক কি ? আপনি যখন টাকা খরচ করে Google Ads, Facebook Ads, Bing Ad, YouTube Video Ads ইত্যাদি ব্যাবহার করে ওয়েব সাইটের ট্রাফিক নিয়ে আসবেন সেই ট্রাফিক গুলো হলো পেইড ট্রাফিক। একটা কথা মনে রাখবেন পেইড মার্কেটিং মানেই সফল না। পেইড মারকেটিং করার জন্য আপনাকে টার্গেটিং বুঝতে হবে মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে হবে ভালো লান্ডিং পেজ তৈরি করতে হবে। সবকিছু জেনে যখন আপনি পেইড মার্কেটিং করবেন তখন খুব সহজে আপনি আফিলিয়েট মারকেটিং করে টাকা আয় করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সময় যেসব সর্তকতা অবলম্বন করবেন –
- নিশ রিলেটেড ১ থেকে ২ টা অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক এ জয়েন করুন।
- সোশ্যাল মিডিয়াতে যেখানে সেখানে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক শেয়ার করবেন না।
- নির্দিষ্ট কোন প্রোডাক্ট নিয়ে লেখা লেখির সময় অন্য কারো কনটেন্ট চুরি করবেন না।
- পেইড মার্কেটিং করার আগে ভালো করে জেনে নিন পেইড সম্পর্কে।