গুগল এড দিয়ে সিপিএ এফিলিয়েট মার্কেটিং সাক্সেস গাইড – পার্ট ৩
আমি প্রতিবার একটি কথাই বলি আর বলতে থাকব তাহলো – আপনিই একমাত্র ব্যাক্তি যে আপনাকে পরিবর্তন করতে পারে শুধুমাত্র। তাই আপনি যদি চান আপনাকে সবাই সম্মান ও শ্রদ্ধা করুক তাহলে আপনাকে এমন কিছু করে দেখাতে হবে যা আপনার আত্মীয়, পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধু বান্ধব, চেনা জানা সকলের থেকে আলাদা কিছু করতে হবে যা তাদের মধ্যে কেউই আগে করেনি বা করছেনা বা চিন্তাও করেনি করার। তাহলেই তো আপনি হবেন আলাদা কেউ, অদ্বিতীয় একজন যা আপনাকে করবে সবার থেকে আলাদা।
তবে অবশ্যই খারাপ কিছু নয়, কারণ আমরা টাকা আয় করার জন্য অনেক খারাপ কিছু করতেও দ্বিধাবোধ করিনা। কিন্তু এটাতে সাময়িক সুখি দেখা গেলেও আলটিমেটলি এটাতে কখনও সুখ বা শান্তি আসেনা। তাই যে কোন কাজ করার আগে অবশ্যই চিন্তা করবেন আপনি কি করছেন, কিভাবে করছেন সেটা কতটুকু লিগ্যাল বা এটার ভবিষ্যৎ কি। এই সব কিছুর সঠিক উত্তর যখন আপনার কাছে আছে, আর সেই উত্তর যদি হয় হ্যা বোধক তাহলে আপনি সামনে আগাতে থাকেন সফলতা কে জড়িয়ে ধরতে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক এবার। আমরা আজকে গুগল এ কিভাবে এড রান করবেন ও এফিলিয়েট অফার প্রমোট করবেন সেটা নিয়ে কথা বলব।
এফিলিয়েট অফার প্রমোট করে আয় করা বা অনলাইনে আয় করার জন্য একটা জিনিসই সব থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ তা হল ট্রাফিক বা ওয়েবসাইটের ভিসিটর, যে ব্যাক্তি যতো বেশী ভিসিটর বা ট্রাফিক নিয়ে আস্তে পারে কোন পেজে বা ওয়েবসাইটে সে তত বেশি সফল হবে বা সে তত বেশি অনলাইনে যে কোন পন্য বিক্রি করতে পারবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। তবে সেই ভিসিটর বা ট্রাফিক গুলো অবশ্যয় টারগেটেড হতে হবে। তার মানে হল আপনি যে রিলেটেড পন্য বা সার্ভিস বিক্রি করতে চাচ্ছেন ওই ব্যাক্তি গুলুও সেই পন্য কিনার জন্য আগ্রহী হবে এমন ব্যাক্তির সামনেই আপনার এডটি শো করতে হবে। তাহলে আপনি যদি ১০০ জন ব্যাক্তির সামনে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখাতে পারেন তার মধ্যে থেকে ৭০ জন ব্যাক্তি আপনার পণ্যটি কিনার সম্ভাবনা আছে।
এফিলিয়েট অফার প্রমোট করার জন্য অনেক রাস্তা আছে, অনেক গুলো মাধ্যম ব্যবহার করে আপনি আপনার এফিলিয়েট অফার কে প্রমোট করে আয় করতে পারবেন, যেমন গুগল এড, ফেচবুক এড, ইন্সটাগ্রাম এড, পিন্টারেস্ট এড, নেটিভ এড, বিং এড, ডিসপ্লে এড, ভিডিও এড, ইত্যাদি। এমন আর অনেক রকমের এড আছে একেক জন একেকভাবে তার অফার, পন্য বা সার্ভিস কে প্রমোট করে থাকে। সব ধরনের বিজ্ঞাপন ই ভাল তবে কিছু কিছু বিজ্ঞাপন বা ট্রাফিক সোর্স একটু বেশী ই ভাল হয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হল গুগল এড। কারন কি তা আমরা সকলে ভাল করেই জানি। কারন হল গুগল হল বিশ্বের #১ সার্চ ইঞ্জিন, যেখানে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় বিষয় গুলো সার্চ করে থাকে। তাহলে চিন্তা করুন এবার আপনার অফার বা পণ্যটি যদি এমন সব ব্যাক্তিদের সামনে রাখা হয় যারা ঐ পণ্যটি নিজ থেকেই খুজছিল কিনার জন্য। তাহলে আপনার কাজ টি সহজ হয়ে যাবে অর্থাৎ আপনাকে আপনার কাস্টমার বা ক্রেতা কে খুজতে হবেনা বরং তারাই আপনাকে খুজে নিবে আপনার কাজ হবে শুধু সঠিক পণ্যটি সঠিক ব্যাক্তির সামনে রাখা। এই কারনে গুগল হল আমার বা আমার মত কোটি মানুষের পছন্দের জায়গা তার পন্য বা এফিলিয়েট অফার কে প্রমোট করার জন্য। তাই এই টিউটোরিয়ালে আমরা দেখাব কিভাবে এফিলিয়েট অফার গুলো গুগল এড এর মাধ্যমে প্রমোট করতে হয়।
১। গুগল এড একাউন্ট তৈরি করাঃ
আগের ২ টা পর্বে আমি আপনাদের কে দেখিয়েছি এফিলিয়েট মারকেটিং শুরু করার জন্য আপনার কি কি লাগবে সেটা। এখানে সংক্ষেপে আবারো বলছি, যে কোন একটি এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক এ জয়েন করা, ভাল একটি অফার পছন্দ করা, সেই অফার এর উপরে ভিত্তি করে সুন্দর ভাবে একটি ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন করা, এবং লেন্ডিং পেজে ভাল মানের কন্টেন্ট এড করা। এসব কিছু তৈরি হওয়ার পরে আপনার কাজ হবে শুধুমাত্র আপনার ল্যান্ডিং পেজ এ প্রতিদিন টার্গেটেড ভিসিটর পাঠানো। আর এই টিউটোরিয়ালে আমরা সেটাই শিখার চেষ্টা করবো। অর্থাৎ গুগল এড দিয়ে কিভাবে আপনি আপনার পণ্যটি বিক্রি করবেন। সর্ব প্রথম আপনার যেটি দরকার হবে গুগল এ আপনার পন্যটি বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য তা হল একটি সচল বা সক্রিয় গুগল একাউন্ট থাকা বা জিমেইল একাউন্ট থাকা। এবার আপনার কাছে ডলার সাপোর্ট করে এমন একটি ভিসা কার্ড বা মাস্টারকার্ড থাকতে হবে। এই ২ টি জিনিস যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে আপনি www.ads.google.com এই লিঙ্কে গিয়ে খুব সহজেই গুগল এ এড দিয়ে দিতে পারেন।
২। গুগল এড ক্যাম্পেইন এর প্রকারভেদঃ
গুগল এ বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য আপনাকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনার গোল কি ও আপনি কোন ধরনের এড গুগল এ দিতে চান আপনার পন্য টি বিক্রি করার জন্য।
গুগল এ বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পেইন করা যায় আপনার টার্গেট বা গোল এর উপরে ভিত্তি করে। প্রতিটা ক্যাম্পেইন এর জন্য রয়েছে আলাদা গোল বা টার্গেট। তাই আপনাকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি আপনার ওয়েবসাইটে ভিসিটর আনতে চান, নাকি পন্য বিক্রি করতে চান, নাকি সাইন আপ এর সংখ্যা বারাতে চান, নাকি ভিডিও এর ভিসিটর বারাতে চান, নাকি আপনার কোম্পানি বা ওয়েবসাইটের ব্র্যান্ডিং করতে চান, নাকি ওয়েবসাইটে আগে ভিসিট করা কাস্টমারদের কে রিটার্গেট করে করে পূণরায় ওয়েবসাইটে ফিরিয়ে আনতে চান? এই বিষয়গুলোর উপরে বিবেচনা করেয় আপনাকে আপনার গুগল এর ক্যাম্পেইন টাইপ নির্বাচন করতে হবে।
গুগল এর ক্যাম্পেইন টাইপঃ
১। Search Campaign (সার্চ ক্যাম্পেইন)
2. Display Campaign (ডিসপ্লে ক্যাম্পেইন)
3. Video Campaign (ভিডিও ক্যাম্পেইন)
4. Shopping Campaign (শপিং ক্যাম্পেইন)
5. App Campaign (এপ ক্যাম্পেইন)
6. Local Campaign (লোকাল ক্যাম্পেইন)
7. Smart Campaign (স্মার্ট ক্যাম্পেইন)
প্রতিটা ক্যাম্পেইন এর টাইপ বা কখন কোনটা ব্যবহার করতে হবে তা নিয়ে পরের আর্টিকেলে কথা বলব – ইন শা আল্লাহ। প্রতিটা ক্যাম্পেইনের আলাদা বৈশিষ্ট আছে, প্রতিটা ক্যাম্পেইন টাইপই কোন না কোনভাবে আলাদা মর্যাদা বহন করে, আলাদা শক্তি নিয়ে কাজ করে, তাই আমাদের কে প্রতিটা ক্যাম্পেইন টাইপ নিয়েই জ্ঞান রাখতে হবে, তবে আজকে আমরা কথা বলব মূলত সার্চ ক্যাম্পেইন নিয়ে। সার্চ ক্যাম্পেইন হল সব থেকে বহুল ব্যবহৃত গুগল এড ক্যাম্পেইন, অর্থাৎ যে বা যারা গুগল এ বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটের ভিসিটর প্রধানত বিক্রি বাড়াতে চায় তাদের জন্য #১ পছন্দের ক্যাম্পেইন হল গুগল সার্চ ক্যাম্পেইন। আমরা যেহেতু এফিলিয়েট অফার প্রমোট করে আয় করতে চায় সেহেতু আমাদের মূল টার্গেট হবে পন্য বিক্রি করা আর তাই সার্চ ক্যাম্পেইন টা আমাদের প্রথম পছন্দ হতে পারে।
৩। সার্চ ক্যাম্পেইন তৈরি করাঃ
সার্চ ক্যাম্পেইন কি আসলে? সার্চ ক্যাম্পেইন কি তা জানতে হলে আমাদের কে আগে বুঝতে হবে সার্চ কি? সার্চ বা Search একটি ইংরেজি শব্দ যার অর্থ হল কোন কিছু খুজা, তার মানে আমরা কোন তথ্য খুজার জন্য যখন গুগল এ সার্চ করি সেটাকে বলা হয় সার্চিং, আর আমরা কোন কিছু খুজার জন্য যেহেতু গুগল কে ব্যবহার করি তাই এটিকে একটি সার্চ ইঞ্জিন বলা হয়। আর গুগল হল সব থেকে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহারিত একটি সার্চ ইঞ্জিন। আমরা যখন কোন কিছু সার্চ করার জন্য গুগল ব্যাবহার করি তখন গুগল আমাদেরকে ২ ধরনের রেসাল্ট দেখায়, সেগুলু হল
১। অরগানিক রেসাল্ট
২। পেইড রেসাল্ট
অরগানিক রেসাল্ট হল যেটি প্রাকিতিক ভাবে কোন ধরনের টাকা ছাড়াই আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট কোয়ালিটি বা এস ই ও এর উপরে ভিত্তি করে টপ রেঙ্কে আসে, সেটাকে অরগানিক রেসাল্ট বলা হয়ে থাকে। যেমনঃ
আর দ্বিতীয় যে ধরনের রেসাল্ট শো করে গুগলে তা হল পেইড রেসাল্ট, অর্থাৎ কোন বেক্তি যদি গুগল কে পে করে তার ওয়েবসাইট কে টপ এ বা রেঙ্কিং এ রাখার জন্য সেটাকে বলা হয় গুগল এডস বা পেইড রেঙ্কিং। আপনার ওয়েবসাইট ততক্ষণই গুগল এ সার্চ রেসাল্ট এ টপ পেজে থাকবে যতক্ষণ আপনি গুগল কে পেমেন্ট করবেন। আর এটাকেই বলা হয় গুগল সার্চ এড। যেমনঃ
গুগল সার্চ এড ক্যাম্পেইন তৈরি করার জন্য আমাদের মূলত ৩ টা বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে, তা হল –
১। ক্যাম্পেইন টাইপ নির্বাচন করে, ক্যাম্পেইন মেক করা
২। এড গ্রুপ তৈরি করা ও কিওয়ার্ড নির্বাচন করা
৩। এড সেট তৈরি করা ও ভাল মানের এড কপি লিখা
আজকের টিউটোরিয়াল এই পর্জন্ত, পরের টিউটোরিয়াল এ আমরা আলোচনা করবো, গুগল ক্যাম্পেইন টাইপ ও সার্চ ক্যাম্পেইন তৈরি করা নিয়ে। তাই প্রতিদিন চোখ রাখুন কোডার্স হেভেন ওয়েবসাইটে আর নিজেকে আপডেটেড রাখুন সব সময়। ধন্যবাদ।আগের টিউটোরিয়াল গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন – www.coders-heaven.com/blog/